ফটিকছড়ি প্রতিনিধি।। গত কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হালদা নদী ও ধুরুং খালের বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে মারাত্মকভাবে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসন নানান পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জানা যায় উপজেলার, দাঁতমারা, নারায়নহাট, ভূজপুর, পাইন্দং, হারুয়ালছড়ি, সুয়াবিল, লেলাং, রোসাংগিরি, সমিতিরহাট, জাফতনগর ও আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসন জরুরি সেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বন্যার পানিতে কয়েকশ একর রোপা আমন ধান, বীজতলা, ও বর্ষাকালীন সবজির ক্ষেত, ফলজ বাগান প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও, উপজেলার ২০-৩০টি মাছের ঘের ও বেশকিছু পুকুর ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যার কারণে মুরগি ও গরুর খামারগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে, গত ৫ আগস্ট থেকে উপজেলার কয়েকটি পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, এবং স্থানীয় আওয়ামীপন্থী জনপ্রতিনিধিরা আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে বন্যা পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের পাশে পাচ্ছেন না। এতে পানিবন্দি হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
সুয়াবিলের বাসিন্দা মো. সোহেল বলেন, “গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সুয়াবিল এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে পড়েছে। মানুষ নিজেদের জান-মাল রক্ষার চেষ্টা করছে।” তিনি দ্রুত উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।রোসাংগিরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম শোয়েব আল ছালেহীন বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। ব্যক্তিগতভাবে এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতির বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। বন্যা দুর্গতদের জন্য খোলা হয়ে আশ্রয় কেন্দ্র। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিবি/ জেএম/ ডেস্ক